জায়েদ খানকে শপথ পড়ালেন ইলিয়াস কাঞ্চন
-

বিনোদন প্রতিবেদনঃ

শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে এবার শপথ নিলেন জায়েদ খান। গতকাল শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে এফডিসিতে তাকে শপথ পাঠ করান শিল্পী সমিতির সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন।


একই দিনে শপথ নিয়েছেন সহ-সভাপতি মনোয়ার হোসেন ডিপজল, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক জয় চৌধুরী, কার্যনির্বাহী সদস্য সুচরিতা ও অরুণা বিশ্বাস। শপথ গ্রহণ শেষে সমিতির প্রথম কার্যনির্বাহী মিটিংয়ে অংশ নেন উপস্থিত সবাই। খবর বাংলানিউজের।

এর আগে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, আমরা গঠনতন্ত্র অনুযায়ী চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির কার্যক্রম চালিয়ে যাবো। গঠনতন্ত্রের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। সাধারণ সম্পাদক পদটি নিয়ে জটিলতা ছিলো। জায়েদ খান আমাকে কোর্টের সার্টিফাইড কপি দেখিয়েছে, তাই তাকে আমি শপথ পাঠ করাচ্ছি। আদালতের রায়তো অমান্য করতে পারি না। সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার কারণে এর আগে শপথ নিয়েছিলেন ১১ জন সদস্য। তবে তাতে অংশ নেননি ২৮ জানুয়ারির নির্বাচনে মিশা সওদাগর-জায়েদ খান প্যানেলের জয়ী কেউ। তবে পরবর্তীতে শপথ নিয়েছিলেন এই প্যানেলের কার্যনির্বাহী সদস্য অঞ্জনা। এর আগে কয়েক দফা রুল শুনানির পর বুধবার জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করে নিপুণ আক্তারকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জয়ী ঘোষণা করার আপিল বোর্ডের দেওয়া সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।

জায়েদের রিটে জারি করা রুল যথাযথ করে বিচারপতি মামনুন রহমান ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। তার আগে ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনের প্রাথমিক ফলে সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খানকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। তবে, তার বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে ভোট কেনাসহ নির্বাচনকে প্রভাবিত করার অভিযোগ করেন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী নিপুণ আক্তার। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনের আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান জায়েদের প্রার্থিতা বাতিল করে নিপুণকে বিনা-প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী ঘোষণা করেন।

এরপর থেকেই বিষয়টি ‘বেআইনি’ বলে দাবি করে আসছেন জায়েদ খান। এরপর গত ৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) প্রাঙ্গণে ইলিয়াস কাঞ্চন ও নিপুণ আক্তারের নেতৃত্বে নতুন কমিটির একাংশ শপথগ্রহণ করে। পরে শিল্পী সমিতির কার্যালয়ে গিয়ে নিজ নিজ পদের চেয়ারে বসেন তারা। তাদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেন শিল্পী সমিতির সদস্যরা। পরের দিন ৭ ফেব্রুয়ারি জায়েদ খান রিট করেন।

ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করে নিপুণ আক্তারকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জয়ী ঘোষণা করায় আপিল বোর্ডের দেওয়া সিদ্ধান্ত স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। আদেশে নিপুণ আক্তারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বোর্ডকে ২ ফেব্রুয়ারি সমাজসেবা অধিদপ্তরের দেওয়া চিঠির কার্যকারিতা এবং জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করে নিপুণকে বিজয়ী ঘোষণা করে আপিল বোর্ডের দেওয়া সিদ্ধান্তের কার্যকারিতা স্থগিত করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে সমাজসেবা অধিদপ্তরের চিঠি এবং আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, এ মর্মে এক সপ্তাহের রুল জারি করেছেন আদালত। এছাড়া জায়েদ খানের দায়িত্ব পালনে কোনো ধরনের বাধা না দিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়। হাইকোর্টের এই আদেশের বিরুদ্ধে গত ৮ ফেব্রুয়ারি চিত্রনায়িকা নিপুণ আক্তার আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেন। সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে ৯ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে ওই পদে দায়িত্ব পালনের ওপর ‘স্থিতাবস্থা’ দেন চেম্বার আদালত।

একইসঙ্গে ১৩ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য আবেদনটি পাঠিয়ে আদেশ দেন চেম্বার বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি নিপুণের আইনজীবী রোকনউদ্দিন মাহমুদ আদালতে বলেন, হাইকোর্টের আদেশের অনুলিপি পেয়েছেন। তাই সিপি (লিভ টু আপিল) করবেন। এদিন আদালত শুনানির জন্য ১৪ ফেব্রুয়ারি শুনানির জন্য দিন রাখেন। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্টের আদেশের ওপর চেম্বার আদালতের স্থগিতাদেশ এবং স্থিতাবস্থা বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে এ বিষয়ে হাইকোর্টে রুল শুনানি করতে বলেন সর্বোচ্চ আদালত। সে অনুসারে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রুল শুনানি শুরু হয়।