ইউপি সদস্য হয়েও পত্রিকা বিক্রি করে সংসার চালান চম্পা
-

অনলাইন ডেস্কঃ

সংবাদপত্রের সঙ্গে আমার আত্মিক সম্পর্ক রয়েছে। এতকাল আমি পত্রিকা বিক্রি করে জীবন চালিয়েছি। পাঠকের হাতে হাতে পত্রিকা তুলে দিয়েছি। ইউপি সদস্য হয়েছি তাতে কি, আমি আমার আত্মার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা কাজ পত্রিকা বিক্রি করা এটা চালিয়েই যাব। এক প্রতিক্রিয়ায় নিজের অভিব্যক্তি এভাবেই প্রকাশ করলেন পাবনার চাটমোহর উপজেলার পার্শ্বডাঙ্গা ইউনিয়নের সংরক্ষিত ইউপি সদস্য জান্নাতুল সরকার চম্পা।  

গত ২৮ নভেম্বর তৃতীয় ধাপের ইউপি নির্বাচনে সংরক্ষিত-২নং ওয়ার্ডে বই প্রতিক নিয়ে নির্বাচন করে ২২৭৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন তিনি। এভাবেই প্রতিদিন খবরের কাগজ নিয়ে ছুটে চলা চম্পা নিজেই এবার খবরের শিরোনাম হলেন। পার্শ্বডাঙ্গা ইউনিয়নের মল্লিকবাইন গ্রামের ইছাহক আলীর মেয়ে জান্নাতুল সরকার চম্পা জানান, কোনো কাজই ছোট নয়। উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেও আমি চাকরি পাইনি। পরনির্ভরশীল হয়েও থাকতে চাইনি। তাই লোকলজ্জার ভয় উপেক্ষা করে কয়েক বছর আগে বাইসাইকেল নিয়ে বেড়িয়ে পড়ি খবরের কাগজ বিক্রি করতে। এটিই আমার পেশায় পরিণত হয়। চাকরির বয়স চলে গেছে। চাকরি পাইনি তাতে কি কাজ তো করছি।কষ্ট করছি কিন্তু জীবনযুদ্ধে হারিনি আমি। সংবাদপত্রই আমাকে পরিচিত করেছে। এবার জনগণ আমাকে ভালোবেসে তাদের মূল্যবান ভোট দিয়ে জয়ী করে যে দায়িত্ব দিয়েছে সেটা সুষ্ঠুভাবে পালনে সব সময় সচেষ্ট থাকব। তবে পত্রিকা বিক্রি করা ছাড়বো না আমি।

চাটমোহর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফিরোজা পারভীন জানান, চম্পা আত্মবিশ্বাসী এক মেয়ে। আগে সাইকেল চালিয়ে পত্রিকা বিক্রি করলেও একটি সংগঠন তাকে অটোবাইক কিনে দেয়। ভোর থেকে প্রায় দুপুর পর্যন্ত অটোবাইক চালিয়ে চম্পা পৌর শহরসহ আশপাশের বাজারে পত্রিকা পৌঁছে দেন মানুষের বাড়ি বাড়ি। প্রতিদিন প্রায় ৭ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে উপজেলা সদরে আসেন পত্রিকা বিক্রি করতে। অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন দোকান ও পৌর শহরসহ বিভিন্ন এলাকার পাঠকের হাতে খবরের কাগজ তুলে দিয়ে বিকেলে বাড়ি ফেরেন।