সাদ্দাম হোসেনঃ
অনিয়ম, দুর্নীতি আর অসংগতি রোধে কাজ করছেন আনোয়ারা থানার অফিসার ইনচার্জ মির্জা মোহাম্মদ হাসান । সদা হাস্যোজ্জল ব্যাক্তিটি সাধারণ মানুষের কাছে বিপদের বন্ধু আর আস্থার প্রতীক হিসেবে সুনাম কুড়িয়েছেন অনেক আগেই।
৮ জুলাই ‘২২ আনোয়ারা থানার দায়িত্ব গ্রহণ করেন ওসি মির্জা মোহাম্মদ হাসান। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই আইন শৃঙ্খলা চোখে পড়ার মত যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে । মাদক, সন্ত্রাস, চুরি, ডাকাতি ও অনিয়ম আর দুর্নীতির বিরুদ্ধে নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন জনবান্ধব ওসি মির্জা মোহাম্মদ হাসান। সকল অফিসারদের সঠিক দিক নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। দায়িত্বহীনতার পরিচয় বহন না করে রাষ্ট্রের পবিত্র দায়িত্ব পালন করে যাবে এমনটিই প্রত্যাশা করেন সকল অফিসারদের কাছ থেকে তিনি। কোন অফিসার এর ব্যর্থয় ঘটালে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণে দ্বিধাবোধ করবে না এমনটি বললেন জনবান্ধব ওসি মির্জা মোহাম্মদ হাসান।
২৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় অফিসার ইনচার্জ কার্যালয়ে এই প্রতিনিধির সাথে আলাপকালে এসব কথা বলেন মির্জা মোহাম্মদ হাসান।
আনোয়ারা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মোঃ হুমায়ুন কবির এর সঠিক দিক নির্দেশনা মেনে মাদক, সন্ত্রাস, জঙ্গির বিরুদ্ধে প্রশাসনের জিরো টলারেন্স থেকে এগিয়ে যেতে চাই। অন্যায়ের কাছে আপোষহীনভাবে জনবান্ধব পুলিশ প্রশাসন তৈরি করাই আমাদের লক্ষ্য। স্যারের এই নির্দেশনা মাফিক আমাদের পথচলা। আমাদের লক্ষ্য উদ্দেশ্য এক ও অভিন্ন । মাদক, জঙ্গি সন্ত্রাসমুক্ত জনবান্ধব এক পুলিশ প্রশাসন আনোয়ারাবাসীকে উপহার দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য।
কর্ম জীবনে যেমন আদর্শকে সামনে রেখেই অবিরত তার পথ চলা অল্প সময়ের মধ্যে আনোয়ারা সর্বস্তরের মানুষের কাছে প্রিয় এক অভিভাবক হিসেবে প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি।
থানায় দালালী সম্পর্কে জানাতে চাইলে তিনি বলেন, আমার থানার এরিয়ায় কোন দালালের জায়গা নেই, কোন অপরাধীর পক্ষ নিয়ে দালালী করতে আসলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোন অপরাধীর জন্য দল ও দলের কোন প্রভাবশালীর সুপারিশ গ্রহণযোগ্য নহে।
মাদক, সন্ত্রাস এবং কিশোর গ্যাং ও তাদের গডফাদারদের ব্যাপারে আপনার অবস্থান কি? জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি আগেই বলেছি মাদক সন্ত্রাসের ব্যাপারে সার্কেল স্যারের কঠোর নির্দেশনা পেয়ে কঠোর অবস্থানে আছি এবং থাকবো। শুদ্ধি অভিযান চলছে। ইতিপূর্বে মাদক ব্যবসায়ীসহ অনেক অপরাধীকে আটক করতে সক্ষম হয়েছি। বর্তমানে অনেক অপরাধীরাই আত্মগাপন করে আছে অচিরেই তাদের আটক করতে সক্ষম হবো। শুদ্ধি অভিযানও অব্যাহতি থাকবে।
বাল্য বিবাহের ব্যাপারে আপনার অবস্থান কি? জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই সময়ে বাল্য বিবাহ খারাপ সংকেত। শিক্ষিত সমাজের মাঝে বাল্য বিবাহ প্রথা একটু কম। মফস্বল এলাকায় কমশিক্ষিত পরিবারের মাঝে এমনটি দেখা যায়, ভুল সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধাবোধ করেন না। অধিকাংশ বাল্য বিবাহ সম্পন্ন হয় গোপনে সোর্স এবং সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতে পারি তখন সময়ক্ষেপন না করে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে বিবাহ বন্ধ করে দেই। বর কনের অভিভাবকদের বুঝিয়ে সঠিক পথে নিয়ে আসার চেষ্টা করি। তাদের ভুল যাতে ভেঙ্গে যায় সেই ধরনের নির্দেশনা দেই। কেউ এই নির্দেশনা অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করি।
থানায় অভিযোগ করতে কোন টাকা পয়সা নেওয়া হয় কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন,থানায় অভিযোগ করতে কোন টাকা পয়সা নেওয়া হয় না। যদি কোন অফিসার টাকা নেয় এমন তথ্য প্রমাণ দিতে পারলে তার বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিভিন্ন সমস্যায় পড়ে থানায় আগত মানুষের কথা শুনে তাৎক্ষণিক সমাধান দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি। কতটুকু জনগনকে সেবা দিতে পেরেছি জানিনা তবে শতভাগ সেবা দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রের পবিত্র পোষাক পড়ে সেবা দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছি।
থানার সুবিধা অসুবিধার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জনগণের সেবা নিশ্চিত করতে হবে। আর জনগণের সেবা নিশ্চিত করাটাই হলো আমার মূল লক্ষ্য। দায়িত্ব অবিচল নিজেকে রেখে এগিয়ে যেতে হবে। থানায় সুবিধা অসুবিধা থাকবে তবে কিছু সমস্যাতো রয়েছেই আপনাদের মাধ্যমে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে অনুরোধ থাকবে আনোয়ারা থানায় একটি গাড়ি দিয়ে দিনে রাতে ডিউটি করা কঠিন সেখানে আরো কিছু গাড়ী বাড়ালে কাজের গতি আরো বেগবান হবে। দ্রুত চাঁদাবাজ, চোর, ডাকাতসহ অপরাধীকে আটক করতে সহায়ক হবে।
জনবান্ধব ওসির কর্ম জীবন সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন ১৯৯৬ সালে এস আই হিসাবে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করি।রাজশাহীর সারদা পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার থেকে কৃতিত্বের সাথে টেনিং শেষ করে কক্সবাজার ইন্ড্রাষ্ট্রিয়াল পুলিশে যোগদান করি। দীর্ঘ সময় সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন শেষে সোনাগাজী থানায় তদন্ত ওসি হিসাবে যোগদান করি।এরপর নোয়াখালী সুধারাম থানায় তদন্ত ওসি হিসাবে কাজ করি। নোয়াখালী কবির হাট থানায় চার বছর দায়িত্ব পালন করে সর্বস্তরের মানুষের কাছে প্রিয় এক অভিভাবক হিসেবে প্রশংসা কুড়ান তিনি।
বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়ীয়া বিজয় নগর থানার ওসি হিসাবে দায়িত্ব পালনের পর আনোয়ারা থানায় যোগদান করি।