ইতিহাস গড়ল যশোরবাসী,প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেখতে নতুন ইতিহাস রচিত হলো
রফিকুল ইসলাম রনি, যশোর থেকেঃ
স্মরণকালের জনসমুদ্র নামিয়ে নতুন ইতিহাস গড়ল যশোরবাসী। যশোর শহরের শামস-উল হুদা স্টেডিয়ামে আওয়ামী লীগের জনসভায় কয়েক লাখ মানুষের উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা ছিল কানায় কানায় পূর্ণ।
এর পাশাপাশি ডা. আবদুর রাজ্জাক মিউনিসিপ্যাল কলেজ মাঠেও তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। গোটা যশোর শহর পরিণত হয়েছিল জনসমুদ্রে। আজ থেকে ৫০ বছর আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জনসভার পর এটিই স্মরণকালের বড় জনসভা। জনসভামঞ্চ ছাড়াও শহরজুড়ে মাইক ও মনিটর লাগানো হয়েছে।
জনসভায় আসা মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উন্নয়ন অর্জনের জন্য তারা স্বাধীনতার প্রতীক নৌকাকে চায়। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুনরায় আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় দেখতে চায়। স্থানীয়রা বলছে, যশোরসহ সারাদেশের উন্নয়নের রূপকার বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সরকারের হাত ধরেই যশোরের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছেন বলেই পদ্মাসেতু ও মধুমতি সেতু নির্মিত হয়েছে। এই সেতু আজকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করেছে।মাত্র আড়াই ঘণ্টাই আমরা ঢাকায় পৌঁছতে পারছি। উন্নয়নের জন্য বারবার আওয়ামী লীগ সরকারই দরকার।
প্রধানমন্ত্রীকে সামনে থেকে একনজর দেখার জন্য যশোরের বেনাপোলের সীমান্তবর্তী এলাকা শার্শা উপজেলা থেকে এসেছেন ষাটোর্ধ্ব সালেহা বেগম। তিনি বলেন, সকাল ১০টায় বেনাপোল থেকে রওনা দিয়ে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই আমার ছেলেকে নিয়ে এখানে এসেছি। আমি আগে কখনও কোনো জনসভায় যোগ দেয়নি।
আজকে শেখ হাসিনাকে সামনে থেকে দেখার জন্য এসেছি। আমার এলাকার রাস্তা-ঘাটের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। আসতে বেশি সময় লাগেনি। শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করি, আল্লাহ যেন তাঁকে দীর্ঘদিন বাঁচিয়ে রাখেন।
নিজ খরচে মনিরামপুর উপজেলার আলিপুর থেকে এসেছেন ৩২ বছরের যুবক ইন্দ্রজিত বিশ্বাস। যশোর শহরের শামস-উল হুদা স্টেডিয়ামে ৫ বন্ধু এসেছেন তারা। তিনি বলেন, আমার কোনো রাজনৈতিক পদপদবী নেই। আমি কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নই। শুধু মাত্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভালোবেসেই এখানে এসেছি। আমি অবশ্যই চাই আগামীতেও আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসুক। কারণ আওয়ামী লীগই হচ্ছে সব মানুষের দল।
অভয়নগর থেকে এসেছেন আমজাদ সরদার। তিনি একজন আওয়ামী লীগের কর্মী। আমজাদ সরদার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা উপলক্ষে আমরা যশোর শহরে এসেছি। দীর্ঘ ৫ বছর পর প্রধানমন্ত্রী যশোরে এসেছেন। শুনেছি ৫০ বছর আগে শামস-উল হুদা স্টেডিয়ামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বক্তব্য দিয়েছিলেন। আজকে ৫০ বছর পরে দেশরত্ন শেখ হাসিনা এখানে বক্তব্য দিলেন। আজকে নতুন ইতিহাস রচিত হলো। আমিও এই ইতিহাসের সাক্ষী হলাম।
ইন্দ্রজিত আরও বলেন, আওয়ামী লীগ গরীবের সরকার। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই সাধারণ মানুষের অনেক উপকার হয়। আওয়ামী লীগ আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই।
শুধু যশোর নয় আশপাশের জেলা থেকেও নেতাকর্মীরা ছুটে আসেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেখতে, তার বক্তব্য শোনার জন্য। বিশেষ করে খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর, মাগুরা, চুয়াডাঙ্গা ও নড়াইলের নেতাকর্মীর সঙ্গে সাধারণ মানুষও যোগ দেয় শেখ হাসিনার জনসভার পথে। তবে সব বয়সী মানুষদের ভীড়ে তরুণদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত। তারুণ্যের দৃপ্তকণ্ঠে বারবার উচ্চারিত হতে থাকে '‘উন্নয়নের সরকার বারবার দরকার। আওয়ামী লীগ সরকার আরেক বার দরকার।' মিছিল নিয়ে জনসভায় উপস্থিত হন যশোর-১ আসনের এমপি শেখ আফিল উদ্দিন, যশোর-২ আসনের এমপি মেজর জেনারেল (অব.) নাসির উদ্দিন, যশোর-৩ আসনের এমপি কাজী নাবিল আহমেদ ও যশোর-৫ আসনের এমপি স্বপন ভট্টাচার্য। এছাড়াও মাগুরা থেকে প্রায় ২৫ হাজার নেতাকর্মী একটা বহর নিয়ে আসেন জনসভায়, আসেন মাগুরা-১ আসনের এমপি সাইফুজ্জামান শেখর ও সাতক্ষীরা-৪ আসনের এমপি এস. এম জগলুল হায়দার- তাদের নেতৃত্বে বিশাল মিছিল আসে জনসভাস্থলে। সাতক্ষীরা-৪ আসনের এমপি জগলুল হায়দার বলেন, আমরা নেত্রীর মুখ থেকে নির্দেশনা শুনতে এসেছি। শুধু নিজেই আসিনি, এলাকা থেকে কয়েক হাজার নেতাকর্মী আমার সঙ্গে এসেছেন প্রিয় নেত্রীকে এক নজর দেখার জন্য।