সাদ্দাম হোসেন
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে শান্তির হাট, আমজুর হাট এলাকায় কমেছে যানজটের দৃশ্য যেখানে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতে হয়েছে যাত্রী ও যানবাহন চালকদের,সেখানে বাধাহীনভাবে চলছে গাড়ি।
আজ সকালে সরেজমিনে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে শান্তির হাট, আমজুর হাট, এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, সড়কে নেই কোন যানজট। নেই কোন বাধা। তবে চালক ও হেল্পারা বাধাহীনভাবে চালাচ্ছেন যানবাহনগুলো।
এব্যাপারে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে চলাচলরত কয়েকটি দূরপাল্লার যাত্রীবাহী কোচ ও লোকাল বাস চালকদের সাথে কথা বললে তারা এই মহাসড়কে যানজট আগের চেয়ে অনেক কমেছে বলে জানান।
শান্তির হাট এলাকার লোকাল বাস চালক তৌহিদুল ইসলাম সিআইডি ওয়ার্ল্ড টিভিকে জানান, এই স্পটে আগে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতে হয়েছে যাত্রী ও আমরা যানবাহন চালকদের,পটিয়া হাইওয়ে পুলিশের নতুন ওসি স্যার আসার পরে মোটামুটি দায়িত্ব ভালোই পালন করছেন। যানজট এখন তেমন একটা নাই বললেই চলে।
এব্যাপারে স্থানীয় মোঃ মহিউদ্দিন মুরাদ সিআইডি ওয়ার্ল্ড টিভিকে বলেন, বর্তমান নতুন অফিসার ইনচার্জ ও তার টিম এর সদস্যদের একনিষ্ঠতায় বর্তমানে শান্তির হাট থেকে পটিয়া সদর পর্যন্ত পটিয়া হাইওয়ে থানার থানাধীন মহাসড়কে আগের চেয়ে তুলনামূলক স্বস্তি নিয়েই চলাচল করছে যানবাহন ও সাধারণ যাত্রীরা। কমছে ট্রাফিক জ্যাম।
জানা যায়, একসময় যানজটে আটকে থাকা শত শত যানবাহনের দীর্ঘ সারি থাকত। যানবাহনের অনিয়মতান্ত্রিক পার্কিং ও যত্রতত্র থেমে যাত্রী ওঠানো-নামানোয় নিত্যদিন জ্যামে যাত্রীদের দূর্বিষহ অবস্থায় পড়তে হতো। সকালে পটিয়া আদালতে যাওয়া সাধারণ যাত্রী, স্কুল শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের যাতায়াত সময়ে ও ফিরে আসা সময়ে অসংখ্য যানবাহনের ভীড়ে এক নারকীয় যানজটের সৃষ্টি করতো।সরকারি ছুটির দিনে গাড়ির চাপ বেশি হলে তীব্র যানজট লেগে থাকতো। তাছাড়া মাল বোঝাই ট্রাক বিকেল হলে তো কথাই নেই। যানজটে আটকা পড়ে দীর্ঘ সময় চলে যেতো। এতে করে ভোগান্তি পোহাতে হতো যাত্রী ও চালকদের।যেখানে পটিয়া হাইওয়ে পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশ যানজট নিরসনে চট্টগ্রাম - কক্সবাজার মহাসড়কে পাল্টে গেছে চিরচেনা যানজটের দৃশ্য। ফলে বর্তমানে সহজেই গন্ত্যব্যে পৌঁছাতে পারছেন যাত্রীরা।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে ইন্দ্র পুল এলাকায় থেকে বাইপাস সড়কটি চালু হওয়ায় কক্সবাজার ও বান্দরবানের যানবাহন গুলোকে পটিয়া সদরে ঘন্টার পর ঘন্টা আর যানজটে পড়তে হচ্ছে না।
শ্যামলী পরিবহনের চালক মঞ্জু বলেন,চট্টগ্রাম -কক্সবাজার মহাসড়কে আগে ভোগান্তিতে পড়তে হতো। অসহ্য যন্ত্রনাও সইতে হতো আমাদের। এখন আর সেই দুর্ভোগ নেই। সহজে পথ চলা যাচ্ছে। জানিনা পটিয়া হাইওয়ে পুলিশের নতুন ওসি স্যার কে এসেছেন।
জানা যায়, পটিয়া হাইওয়ে থানায়, ১৪ আগস্ট ২০২২ ইং তারিখে যোগদান করেছেন অফিসার ইনচার্জ হিসেবে স্নেহাংশু বিকাশ সরকার। মূলত একটা চ্যালেঞ্জ নিয়েই তিনি এই পটিয়া হাইওয়ে থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছেন।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে শান্তির হাট এলাকার যানজট আগের চেয়ে কমে যাওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে, পটিয়া হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ স্নেহাংশু বিকাশ সরকার সিআইডি ওয়ার্ল্ড টিভিকে বলেন,পটিয়া হাইওয়ে থানায় আমি যোগদানের পূর্বে আমাকে আমার কর্তৃপক্ষ কিছু চ্যালেঞ্জের কথা আমাকে বলে দিয়েছিলেন। তাই আমি যোগদান করার পরে এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে কাজ শুরু করি। প্রতিদিন সকালে আমার অফিসারদের ও সঙ্গীয় ফোর্সদের নিয়ে সারাদিন ওই সব স্পটে অভিযান পরিচালনা করি। শুরুটা করেছি এবং এই অল্পসময়ে নিশ্চয়ই সাধারণ মানুষ আগের থেকে পার্থক্যটা অনুভব করতে পারছেন। যানজট অনেক কমে গেছে, পাশাপাশি কমেছে দূর্ঘটনার হারও। আশা করছি এভাবে কাজ চালিয়ে যেতে পারলে আমার কর্তৃপক্ষ যে উদ্দেশ্য নিয়ে আমাকে পাঠিয়েছেন তা ইনশা আল্লাহ শেষ করতে পারবো।
তিনি আরো বলেন, অপরাধ দমন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা পুলিশ প্রশাসনকে সার্বিক সাহায্য সহযোগিতা করার জন্য পটিয়া হাইওয়ে থানায় নেতৃত্বে শান্তির হাট এলাকায় কমিউনিটি পুলিশিং কমিটি গঠন করা হয়েছে, এতে সভাপতি হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়েছেন স্থানীয় চেয়ারম্যান শাহাদত হোসেন সবুজ। শান্তির হাট এলাকায় প্রতিটি বন্ধের দিন এবং উৎসব পালনে যানজট নিরসন করতে গিয়ে আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের হিমসিম খেতে হতো। যানজট নিরসন করতে গিয়ে আমাদের খুব কষ্ট করতে হয়েছে। এক মিনিটের জন্য রাস্তায় পাশে দাড়ানোর সুযোগ মিলেনি। সারাক্ষণ ট্রাফিক কন্ট্রোল করতে হয়েছে। কমিউনিটি পুলিশিং কমিটি গঠন করার পর সকলের সহযোগিতায় গাড়ি এক মিনিটের জন্য কোথাও দাড়াচ্ছেনা। নেই চিরচেনা যানজটের দৃশ্য। দায়িত্ব পালন করতেও আমার অফিসারদের ও সঙ্গীয় ফোর্সদের কোন কষ্ট হচ্ছেনা। আশা করি এই মহাসড়কে কোন যানজট হবেনা।