অনলাইন ডেস্কঃ
শ্রীলঙ্কার বন্দর, নৌ ও বিমানমন্ত্রী নিমল সিরিপালা ডি সিলভা বলেছেন, ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুধু বাংলাদেশে নেতৃত্ব দিচ্ছেন না, তিনি দক্ষিণ এশিয়ার নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ’ তিনি শেখ হাসিনার প্রশংসা করে বলেন, ‘তাঁর নেতৃত্বে আমরা আরো এগিয়ে যাব। ’
শুক্রবার সচিবালয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বাংলাদেশ ও শ্রীলংকার মধ্যে মেরিটাইম সেক্টর নিয়ে অনুষ্ঠিত এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে শ্রীলংকার মন্ত্রী এসব কথা বলেন। এ সময় নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা মেরিটাইম সেক্টর নিয়ে আরও কাছাকাছি কিভাবে আসা যায় তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে চায়। তারা পায়রা বন্দরে বিনিয়োগে আগ্রহী। ’
দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং শ্রীলঙ্কার বন্দর, নৌ ও বিমানমন্ত্রী নিমল সিরিপালা ডি সিলভা নিজ নিজ দেশের পক্ষে নেতৃত্ব দেন।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘গত ফেব্রুয়ারিতে দু’দেশের সচিব পর্যায়ের একটি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল।
শ্রীলঙ্কায় কিছু সমস্যা হওয়ার কারণে সেটি হয়নি। কলোম্বতে পরবর্তীতে যে সচিব পর্যায়ের বৈঠক হবে, সেখানে মেরিটাইম সেক্টরের বিষয়গুলো চূড়ান্ত করা হবে। এছাড়া কোস্টাল শপিং বা উপকূলীয় নৌচলাচল চুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এগুলো চূড়ান্ত হবে আগামী সচিব পর্যায়ের বৈঠকে।
পায়রা বন্দর পরিদর্শনে শ্রীলংকার একটি প্রতিনিধি দল আসবে বলে প্রতিমন্ত্রী জানান। আলোচনার বিষয় নিয়ে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এখানে রাজনৈতিক কোনো বিষয় নেই, মূলত দু’দেশ যাতে এগিয়ে যেতে পারে সেটিই আমাদের মূল্য লক্ষ্য। ’ বৈঠকে শ্রীলঙ্কার পররাষ্ট্র বিষয়ক উপমন্ত্রী থারাকা বালাসুরিয়া ব্লু-অর্থনীতি নিয়ে আলোচনা করেছেন।
শ্রীলংকার বন্দর, নৌ ও বিমানমন্ত্রী নিমল সিরিপালা ডি সিলভা আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, ‘চট্টগ্রাম ও কলম্বো বন্দরের মধ্যে জাহাজ চলাচল বাড়াতে আলোচনা হয়েছে। কলম্বো বন্দরে লজিস্টিক সহায়তা বাড়ানো হচ্ছে।
বন্দরের জায়গা বেড়ে যাওয়ার কারণে সেখানে সহজেই বাংলাদেশের জাহাজ ভিড়তে পারবে। ’
তিনি জানান, ‘শ্রীলঙ্কার ব্যবসায়ীরা তৈরি পোশাক খাতসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করেছে। ’ বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকায় শ্রীলঙ্কার ব্যবসায়ীরা আরো বিনিয়োগ করতে আগ্রহী বলে জানিয়ে শ্রীলংকার মন্ত্রী বলেন, ‘এতে বাংলাদেশের প্রতি তাদের বিশ্বাস ও আস্থা বেড়ে গেছে। ’
তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে ঋণ পেতে শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক কাঠামো নতুন করে সাজানো হচ্ছে। ’ সেখানে মেরিটাইম খাতে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান তিনি।
চট্টগ্রাম ও পায়রা বন্দরে বিনিয়োগ করতে শ্রীলঙ্কার প্রাইভেট সেক্টর প্রস্তুত আছে বলে জানিয়ে শ্রীলংকার মন্ত্রী বলেন, ‘এটি বাংলাদেশে শ্রীলঙ্কার ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের নতুন দৃষ্টান্ত হবে। ভারত মহাসাগর অঞ্চলে শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ দু’টি ছোট দেশ হলেও ভৌগোলিক কারণে আমাদের অনেক গুরুত্ব রয়েছে। কারণ বাংলাদেশের অনেক রফতানি পণ্য কলম্বো বন্দর হয়ে যায়। এর পরিমাণ আরও বাড়াতে চায় শ্রীলংকা। এতে বাংলাদেশের সময় ও অর্থ সাশ্রয় হয়।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল, শ্রীলংকার উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী থারাকা বালাসুরিয়া, চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম সোহায়েল, বাংলাদেশে শ্রীলঙ্কার নিযুক্ত হাইকমিশনার অধ্যাপক সুদর্শন সেনেভিরত্নে প্রমুুখ। উল্লেখ্য, শ্রীলঙ্কার প্রতিনিধিদল আজ ঢাকায় অনুষ্ঠিতব্য ভারত মহাসাগরীয় আঞ্চলিক দেশগুলোর সম্মেলনে যোগ দিতে এসেছেন।
সূত্র : বাসস।