সীতাকুণ্ডে অংশীদারিত্বের পুকুর থেকে মাছ ধরা নিয়ে বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে একজন নারী ও তার স্বামী-সন্তানকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে একজন আইনজীবী ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত আইনজীবী।
গত শনিবার (২৬ জুন) সকালে সীতাকুণ্ড পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ড দক্ষিণ ইদিলপুর গ্রামের কেরামত আলী ভূঁইয়া বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে জানিয়ে থানায় অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ছালেহা বেগম (৪৮)।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে, “দীর্ঘদিন ধরে ছালেহা বেগমের স্বামী সাহাব উদ্দিনের সঙ্গে প্রতিবেশী আইনজীবী সরোয়ার আলম, জাহাঙ্গীর আলম ও মাহবুব আলমদের সঙ্গে পুকুরসহ জমি-জমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মাঝে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে।
সম্প্রতি সরোয়ার আলমসহ অন্যরা পুকুরের মাছ ‘আত্মসাৎ’ করার চেষ্টা করে আসছেন। ২৬ জুন (শনিবার) ভোরে সকালের অজান্তে ছালেহা বেগমের ইচ্ছার বিরুদ্ধে সরোয়ার আলম পুকুরে জাল দিতে শুরু করেন। এ ঘটনা দেখে ছালেহা বেগম প্রতিবাদ করলে তাকে তার স্বামী ও সন্তানের সামনে বেশ জোরে ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেয় সরোয়ার আলম এবং এলোপাতাড়ি মারতে থাকেন।
অপরদিকে সরোয়ার আলমের সঙ্গে থাকা অন্য ব্যক্তিরা ছালেহা বেগম ও তার স্বামী সাহাব উদ্দিন ও ছেলে শাহাদাত হোসেনের সাথে বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হয়ে তাদেরকে মারধর করেন।”
তবে নারীকে হেনস্তা ও মারধরের অভিযোগটি মিথ্যা বলে দাবি করেছেন আইনজীবী সরোয়ার আলম। তিনি বলেন, ‘আমি কাউকে মারধর করিনি। বরং মহিলাটাকে বাঁচিয়ে নিয়েছি। মহিলাটি জেলেদেরকে মারতে গেছে।’ তবে কার হাত থেকে ওই নারীকে বাঁচিয়ে নিয়েছেন তার কোন সুদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
এ বিষয়ে হেনস্তার শিকার নারীর ছেলে শিক্ষানবিশ আইনজীবী শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘সরোয়ার আলম অংশীদারিত্বের পুকুর থেকে সকল মাছ আত্মসাৎ করতে চাইলে আমি ও আমার মা প্রতিবাদ করি। এসময় তিনি অন্যায়ভাবে আমার মাকে ধাক্কা দেন এবং মারধর করেন। আমি মোবাইলে ভিডিও করলে তিনি এবং তার সহযোগীরা আমাকেও মারধর করে। ’
তিনি বলেন, ‘তারা এখন আমাদেরকে নিয়মিত হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। আমরা জানমালের ক্ষয়ক্ষতির আশংকা করছি। কী করে একজন আইনজীবী হয়ে আমার বৃদ্ধ মায়ের গায়ে তিনি হাত তুলতে পারলেন? এটা আমি মেনে নিতে পারছি না। আমি তার শাস্তি চাই।’
ভুক্তভোগী নারী ছালেহা বেগম বলেন, ‘আমাদের পুকুরের মাছ আত্মসাৎ করছে সরোয়ার। তাকে জাল দিতে নিষেধ করলে সে আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। বেশ কয়েকবার ধাক্কা দেয়, আমার গায়ে হাত তোলে। আমার ছেলেকে গলাটিপে ধরে আমাকে মাটিতে ফেলে মারধর করে। আমি এ অন্যায়ের বিচার চাই।’
এ বিষয়ে অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা সীতাকুণ্ড মডেল থানার এসআই দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘একজন নারী অভিযোগ করেছেন। অভিযোগটি আমরা গ্রহণ করেছি। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মেজবাহ খালেদ/ এনই / সি আই ডি ।