অনলাইন ডেস্কঃ
রংপুরের গঙ্গাচড়ায় অব্যাহত রয়েছে তিস্তার ভাঙন। কোলকোন্দ ইউনিয়নের বিনবিনা চর এলাকায় গত কয়েকদিনে অর্ধশতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া পূর্ব বিনবিনা মোড় হতে বেড়িবাঁধ যাওয়া রাস্তাসহ প্রায় পাঁচ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ভেঙে আবাদযোগ্য জমি নদীতে পরিণত হয়েছে। ভাঙন কবলিত পরিবারগুলো মানবেতর জীবনযাপন করছে।
এলাকাবাসী জানায়, কোরবানির ঈদের কয়েকদিন আগে তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে এলাকায় বন্যা দেখা দেয়। নদীর পানি কমে যাওয়ার সাথে শুরু হয় তিস্তার ভাঙন। অব্যাহত ভাঙনে বিনবিনা পাকা রাস্তায় সংযুক্ত স্বেচ্ছাশ্রমে নির্মিত বাঁধটি ভেঙে পানি বেড়িবাঁধে আঘাত হানে। প্রায় পাঁচ কিলোমিটার বাঁধ ভেঙে পূর্ব বিনবিনা এলাকার তোফাজ্জল হোসেন, সুজা মিয়া, মাহফুজার রহমান, শাফিউর রহমান, আলম মিয়া, এবজাল হোসেন, আব্দুর রহমান, লালটু মিয়া, চান মিয়া, নজরুল ইসলাম, ফজলুল হক, আব্দুর রাজ্জাক, বক্কর মিয়, আব্দুল কুদ্দুছ, বেলাল হোসেন, আকাশ মিয়া, জেয়াদ আলী, মতিয়ার রহমান, হাবিবুর রহমান, মাসুম আলী, তৈয়ব আলী, আনোয়ারুল ইসলাম, মোহাম্মদ আলী, মোস্তা মিয়া, আব্দুল মান্নান, ইয়াছিন আলী, মমিনুর রহমান, আমিনুর রহমান, আলতাব আলী, আতিকুর রহমান, আব্দুল কাদের, সাইয়েদুর রহমান, আব্দুল মতিন, বুলু মিয়া, নওশা মিয়া ও আজিজুল ইসলামসহ অর্ধশতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। হুমকির মুখে রয়েছে বিনবিনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ-মাদরাসাসহ একটি ঈদগাঁহ।
ভাঙনের শিকার ৮০ বছরের তোফাজ্জল হোসেন জানান, ঈদের আগের দিন তার বাড়ি বিলীন হয়েছে। পার্শ্ববর্তী মইষামুড়ি এলাকায় খাস জমিতেও ঠাঁই মেলেনি। অন্যের বাড়ির বারান্দায় পরিবার-পরিজন নিয়ে কোনরকমে আছেন তিনি। পূর্ব বিনবিনা এলাকার খলিল মিয়া, আনিছার মুন্সিসহ অনেকে জানান, ভাঙনের পাশাপাশি বিনবিনা ও মইষামুড়ি এলাকায় বন্যার পানি ঢুকে আবাদী জমিগুলো তলিয়ে গেছে। যাতে চলতি বছর আবাদ করার সুযোগ নেই। দ্রুত ভাঙন রোধের ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তারা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কোলকোন্দ ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব আলী রাজু বলেন, এমনিতে করোনাকালে নিম্ন আয়ের মানুষজন ভালো নেই। তার ওপর তিস্তার বন্যা-ভাঙনে সর্বশান্ত হয়ে পড়েছে বিনবিনা চরের বাসিন্দারা। ভাঙনের শিকার মানুষজনকে সহায়তাসহ দ্রুত ভাঙন রোধের দাবি জানান তিনি।