মেজবাহ খালেদ । ।
সীতাকুণ্ডের সলিমপুর থেকে চট্টগ্রাম আউটার রিং রোডের পশ্চিম পাশে হালিশহর পর্যন্ত উপকূলীয় এলাকায় বন বিভাগ হাতে নিয়েছে নতুন বনায়ন প্রকল্প। যদিও অনেক আগেই জলোচ্ছ্বাস থেকে চট্টগ্রামবাসীকে রক্ষা করতে উপকূলীয় এলাকায় ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল গড়ে তোলা হয়েছিল । আর সে সময় লাগানো হয়েছিল গেওয়া, গোয়া, বাইন ইত্যাদী গাছ । এবার নতুনভাবে রোপণ করা হচ্ছে বনজ, ঔষধি ও শোভাবর্ধনকারী প্রায় ২০ প্রজাতির গাছের চারা।
আউটার রিং রোড ঘিরে শুরু হয়েছে বনবিভাগের দৃষ্টিনন্দন এ বনায়ন। এক শ্রেণির ভূমিদস্যু বেড়িবাঁধ সংলগ্ন এলাকার সরকারি জমি অবৈধভাবে দখল করে গড়ে তুলেছিল ইটভাটাসহ বিভিন্ন স্থাপনা। সম্প্রতি বেশকিছু স্থাপনা উচ্ছেদের পর উদ্ধারকৃত এসব জমিতে উপকূলীয় বন বিভাগ নতুনভাবে কাজ শুরু করেছে।
শুক্রবার উপকূলীয় এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বেড়িবাঁধের পশ্চিম পাশে বিশাল জায়গাজুড়ে ছোট ছোট মাটির টিলায় বেড়ে উঠছে নতুন চারাগুলো। সীতাকুণ্ডের সলিমপুর থেকে হালিশহর পর্যন্ত বিস্তীর্ণ জমিতে রোপণ করা হয়েছে অসংখ্য গাছ। সলিমপুর উপকূলের বেড়িবাঁধ এলাকায় দাঁড়িয়ে পাহারা দিচ্ছিলেন আহমদ নবী। তিনি বলেন, নতুন চারাগুলো বেড়ে না উঠা পর্যন্ত বাগানে গরু-ছাগল বা অন্যকোন প্রাণী থেকে গাছকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। এছাড়া উচ্ছেদকৃত ভূমির অবৈধ দখলদাররা যাতে বনায়নের ক্ষতি করতে না পারে সেটাও দেখছি ।
চট্টগ্রাম উপকূলীয় বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এস এম গোলাম মাওলা বলেন, আউটার রিং রোডের উচ্ছেদকৃত এবং খালি জায়গায় নতুনভাবে বনায়ন শুরু হয়েছে। নতুন এ বনায়নে অশোক, রেইনট্রি, শিরীষ, দেবদারু, ইউক্যালিপ্টাসসহ প্রায় ২০ প্রকারের বনজ, ঔষধিগাছ লাগানো হয়েছে। নতুনভাবে রোপণ করা এসব চারা যাতে সযত্নে বড় হতে পারে এজন্য অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে স্থানীয়দেরকে এতে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। এরমধ্যে স্থানীয়দের উদ্বুদ্ধ করতে বন বিভাগের উদ্যোগে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্বাবলম্বী সমাজ উন্নয়ন সংস্থাকে দায়িত্ব দেয়া হচ্ছে। সংস্থার স্বেচ্ছাসেবকরা উপকূলীয় এলাকার স্থানীয় লোকদের উদ্বুদ্ধসহ নতুন বনায়ন রক্ষায় কাজ করবে।
তিনি বলেন, এখনো বনবিভাগের বেশকিছু জায়গা অবৈধ দখলদারদের হাতে রয়ে গেছে। যারমধ্যে বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তিও রয়ে গেছেন। তবে এসব অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করতে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে তিনি জানান। বলেন, অবৈধ দখলদাররা যতই শক্তিশালী হোক না কেন, বন বিভাগের জমি থেকে অবশ্যই তাদের বিতাড়িত করা হবে। পর্যায়ক্রমে এসব জমিতেও নতুনভাবে বনায়ন করা হবে। বনবিভাগের এ উদ্যোগ সফল হলে সত্যিই পাল্টে যাবে নগরীর উপকূলীয় এলাকা। স্থানীয় এলাকাবাসীরও আশা আবারো প্রকৃতির নৈসর্গিক পরিবেশ ফিরে পাবে চট্টগ্রাম উপকূল।
উপকূলীয় বনবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, শুরুতে কি পরিমাণ ভূমিতে বনায়ন করতে হবে সেটা পরিমাপের পর গাছের সংখ্যা নির্ধারণ করতে হয়। এরপর সারিবদ্ধভাবে নির্দিষ্ট দূরত্বে টিলা তৈরি করে চারা রোপণ করতে হয়। উপকূলীয় বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা শামসুল হকের তত্ত্ববধানে ও বনরক্ষী জুলফিকার আলীর প্রচেষ্টায় এরমধ্যে চারা রোপণের কাজ শেষ হয়েছে।
মেজবাহ খালেদ / এন ই / সি আই ডি ;