সীতাকুণ্ডের পাহাড়ে পাহাড়ে জ্বলছে প্রাকৃতিক গ্যাস,আহরণের উদ্যোগ নেই
সীতাকুণ্ডের পাহাড়ে পাহাড়ে জ্বলছে প্রাকৃতিক গ্যাস,আহরণের উদ্যোগ নেই

বিশেষ প্রতিবেদক। ।

যুগ যুগ ধরে সীতাকুণ্ডের বিভিন্ন পাহাড়ে জ্বলছে প্রাকৃতিক গ্যাস। এলাকাবাসী বংশ পরম্পরায় এসব গ্যাস থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আগুন জ্বলতে দেখে আসলেও মূল্যবান এ খনিজটি আহরণে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কোন উদ্যোগ নেই। ফলে বিস্ময় প্রকাশ করেন দর্শনার্থী ও জনপ্রতিনিধিরা। তাদের অভিমত এসব সম্পদ আহরণ করলে জাতীয়ভাবে কাজে লাগানো যেত।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সীতাকুণ্ড উপজেলার কুমিরা, বাড়বকুণ্ড, বারৈয়াঢালার পাহাড়ে সুদীর্ঘকাল ধরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে প্রাকৃতিক গ্যাস নির্গত হয়ে আগুন জ্বলছে। শীত-গ্রীষ্ম ১২ মাসই এ আগুন জ্বলছে তো জ্বলছেই। কখনোই এ আগুন নেভে না। বরং শুষ্ক মৌসুমে এ আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাহাড়ের লতা গুল্ম-জীবজন্তু পুড়ে ছাই করে দেয়। এলাকার মানুষ বংশানুক্রমে কয়েক পুরুষ ধরে এভাবে গ্যাস নির্গত হতে দেখে আসছে। স্থানভেদে এ গ্যাসক্ষেত্রের আগুনগুলোর নানান নামও দিয়েছেন স্থানীয়রা। কিন্তু এসব গ্যাস আহরণ করা না হওয়ায় তারা হতাশ। সরেজমিনে কুমিরা, বাড়বকুণ্ড ও বারৈয়াঢালার পাহাড় ঘুরে গ্যাস নির্গমের এসব দৃশ্য দেখা যায়। কুমিরা পাহাড়ের একাধিক স্পটে এভাবে আগুন জ্বলছে। গহীন পাহাড়ের একস্থানে রয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রাচীন তীর্থস্থানের কিছু মন্দিরের ভগ্নাবশেষ। এই ভগ্নাবশেষের ভেতরে রয়েছে ছোট্ট একটি জলাশয়।

কুমিরার ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোর্শেদুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘এই পাহাড়ের দুই জায়গা থেকে গ্যাস বের হয় বহুকাল আগে থেকে। সেটি এক শতাব্দীরও বেশি সময় হতে পারে। আমার বাবা, তার বাবা, তারও বাবাসহ অনেক পুরুষ এসব দেখছে।’

এদিকে পাহাড় ছাড়াও উপজেলার মুরাদপুর, কুমিরা, বাঁশবাড়িয়াসহ বিভিন্ন এলাকায় অনেক গ্রামে টিউবওয়েল স্থাপনের সময় গ্যাস ও আগুন নির্গত হতে দেখা গেছে অনেকবার।

সীতাকুণ্ডের ইউএনও মো. শাহাদাত হোসেন বলেন, আসলে এভাবে দেশের অনেক স্থানেই প্রাকৃতিক গ্যাস নির্গত হয়। বাপেক্স এগুলো আহরণে উদ্যোগ নেয়। তবে অনেক স্থানের গ্যাস উত্তোলন করার অবস্থায় থাকে না। তিনি এ বিষয়ে বাপেক্সের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন বলে জানান।

বাপেক্সের এমডি মোহাম্মদ আলী বলেন, বিভিন্ন স্থানে এভাবে গ্যাস লিক হলেও এগুলো রিজার্ভ গ্যাস নয়। এগুলো পকেট গ্যাস। কমার্শিয়াল গ্যাস এক হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার মিটার নিচে থাকে। তবুও আমরা পুরো চট্টগ্রাম ও হিলট্যাক্সে গ্যাস অনুসন্ধানে যৌথ উদ্যোগের জন্য টেন্ডার আহ্বান করব। এছাড়া আগামী ডিসেম্বর থেকে সীতাকুণ্ড ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্থানে টুডি সাইসমিক সার্ভের কাজ করবে বাপেক্স। 

মেজবাহ খালেদ / এন ই / সি আই ডি ;