অনলাইন ডেস্কঃঃনভেম্বর থেকেই কোরিয়াতে ঠাণ্ডা পড়া শুরু হয়। ডিসেম্বর-জানুয়ারি তীব্র শীত থাকে। এ সময় শীতের তাপমাত্রা অসহনীয়ভাবে অনুভূত হয়। আর শীত আসলে খুব বেশি আগ্রহ তুষারের প্রতীক্ষায়। বৃষ্টির মতো কোনো টাপুর-টুপুর শব্দ নেই।
পৃথিবীতে যেন কোথাও কিছু ঘটছে না, নিশব্দে তাণ্ডব চালিয়ে যায় প্রকৃতি। ঝিরঝির নিঃশব্দ হালকা সাদাসাদা তুলার মতো বিন্দু গায়ে লাগালে কেমন যেন একটা শীতল পরশ অনুভূতি হয়। শীতপ্রধান দেশ ছাড়া আর কেউ এই অসাধারণ উপলব্ধি গুলো নিতে পারে না। সে এক এক অদ্ভুত ভয়ঙ্কর সুন্দর।
দক্ষিণ কোরিয়াতে চলছে টানা পাঁচ দিনের নববর্ষের (সল্লাল) ছুটি। কোরিয়াতে বড় বন্ধগুলোতে সাধারণত কোরীয়রা এবং বিদেশিরা ঘুরতে যেতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। কিন্তু কোরিয়াতে হঠাৎ কোরোনার প্রকোপ বেড়ে গিয়ে প্রতিদিনই রেকর্ড সংখ্যক সংক্রমিত হচ্ছে। তারপরও স্বাস্থ্যবিধি মেনে দর্শনীয় স্থানগুলোতে দর্শনার্থীদের ভিড় চোখে পড়ার মত। এভারল্যান্ডের অনেক গল্প শুনেছি। এতদিন করোনা, সময় ও সুযোগের কারণে যাওয়া হয়নি সেখানে। যদিও বাসা থেকে বাসে ২৫ মিনিটের রাস্তা। হঠাৎ কয়েকজন বন্ধু মিলে এভারল্যান্ড যাওয়া পরিকল্পনা। তার আগের দিন সারারাতে তীব্র আকারে তুষার পড়ে। রাস্তাঘাটে শুধু তুষারের স্তর। যতদূর চোখ যায় চারিদিক ধবধবে সাদা। সাকালে চরম ঠাণ্ডা (-১০°) আবহাওয়া। শীতে বরফের মধ্যে ঘুরে বেড়ানোর মজাই নাকি অন্যরকম।
তারপরও… গন্তব্য এভারল্যান্ড। সেখানে টিকিটে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য সাধারণত কোরিয়ান ৫৬ হাজার ইউয়েন খরচ হয়। সব রাইড এর ভেতরে।
আমরা বিসি ব্যাংক কার্ড দিয়ে ৫০% ছাড় পেয়েছি। যেখানে অ্যাডভেঞ্চার ম্যাজিক থেকে সবকিছু রয়েছে। স্থানটি এতোটাই আকর্ষণীয় প্রতিবছর ৭০ লাখের বেশি দর্শনার্থী থিম পার্কটিতে ভ্রমণে আসেন। চারদিকে সাদা তুলার মত দেখে মনে হলো একটুকরো বরফের রাজ্যে প্রবেশ করলাম। এভারল্যান্ড রিসোর্ট হলো দক্ষিণ কোরিয়ার প্রথম এবং বৃহত্তম থিম পার্ক যা ইয়ংইন শহরের অবস্থিত।
এটি স্যামসাং গ্রুপ অফ কোম্পানিগুলির মালিকানাধীন পরিচালিত। এভারল্যান্ডটি পাঁচটি থিমযুক্ত অঞ্চল নিয়ে গঠিত- গ্লোবাল ফেয়ার, জুটোপিয়া, ইউরোপিয়ান অ্যাডভেঞ্চার, ম্যাজিক ল্যান্ড এবং আমেরিকান অ্যাডভেঞ্চার।
সবচেয়ে মজার বিষয় হচ্ছে এই শীতে চারদিকে কৃত্রিম তুষার সাজিয়ে রাখা এভারল্যান্ড বাস্তবে তুষার বরণ নিলো। প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করার মতো। রোজ ফেস্টিভ্যাল গোলাপের ঘ্রাণে ভরা এভারল্যান্ডের রোমান্সে মুগ্ধকর পরিবেশ তৈরি হয়! দিন থেকে রাত রঙিন গোলাপের মোহনায় নিজেকে হারিয়ে যেতে ইচ্ছে করে। এভারল্যান্ড স্নো ফেস্টিভ্যাল এক কথায় অসাধারণ।
দূর-দূরান্ত থেকে পরিবারের ছোট বাচ্চাদের নিয়ে সময় কাটাতে প্রতিদিন থিম পার্কে ছুটে আসেন হাজার হাজার দর্শনার্থী।