সুইডেনে ‘পেটে-ভাতে’ পরিচ্ছন্নতাকর্মীর চাকরি পাচ্ছে কাক।
-

অনলাইন ডেস্কঃ

ময়লার শহরে কাকের মিছিলচিত্র বিশ্বজুড়েই রয়েছে। শহর অপরিচ্ছন্ন করার পেছনে হরহামেশাই কাককে দায়ী করা হয়।

আর এবার ময়লা পরিষ্কারের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে কাকগুলোকেই-যেন ছাই ফেলতে ভাঙা কুলো। সুইডেনের রাস্তায় রাস্তায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা সিগারেটের বাট তুলতে মোতায়েন করা হবে শত শত কাক।

পেটে-ভাতে’ অলিখিত চুক্তিতে তাদের এ কাজে নিয়োজিত করবে সিটি করপোরেশন। ‘কর্ভিড ক্লিনিং’ নামের এ পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়ন

করবে কিপ সুইডেন টিভি ফাউন্ডেশন। এরই মধ্যে কাকগুলোকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে প্রকল্পের কাজ এগিয়ে গেছে অনেক দূর।

এ পদ্ধতিতে শহর পরিচ্ছন্ন কার্যক্রম চালানোর প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে শহরের রাস্তা পরিষ্কারের খরচ কমানো। সুইডেনের রাস্তা থেকে সিগারেটের বাটসহ অন্যান্য আবর্জনা তুলতে যেখানে খরচ হচ্ছে ২০ মিলিয়ন ক্রোনার (প্রায় ১০৯ কোটি টাকা), সেখানে এই কাকগুলোর পেছনে খরচ হবে মাত্র ১৬ লাখ ক্রোনার (১ কোটি ৫০ লাখ টাকা)। অর্থাৎ এ পদ্ধতিতে খরচ কমবে কমপক্ষে ৭৫ শতাংশ।

কাকগুলোকে শিক্ষা দেওয়া সহজ হবে তাদের এ কাজে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে বলে জানান কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা ক্রিশ্চিয়ান গুন্থার হ্যানসেন। তিনি বলেন, ‘কাকগুলোর সঙ্গে অন্যান্য পাখিও স্বেচ্ছায় এ প্রশিক্ষণে অংশ নিচ্ছে।

তাছাড়া, এরা এ কাজ শেখার পর পরিবারের অন্য সদস্যদের মধ্যেও এ প্রশিক্ষণ ছড়িয়ে দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি। পাশাপাশি, এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পাখিগুলো এটাও শিখবে যে, ভুল কোনো জিনিস খাওয়া তাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।’ প্রশিক্ষণে পাখিগুলো শিখছে একটি ময়লার টুকরো নিয়ে নির্দিষ্ট বিনে (ভেন্ডিং মেশিন) ফেলতে হবে। ময়লাটি পাওয়ার পর মেশিনটি পাখির দিকে নির্দিষ্ট পরিমাণ খাবার ছুড়ে দেবে-যা হবে তার কাজের পারিশ্রমিক বা পুরস্কার। গুন্থার হ্যানসেন বলেন, ‘পৌরসভার সঞ্চয় নির্ভর করবে, কাকগুলো কতগুলো সিগারেটের বাট তুলছে-তার ওপর।’ তিনি জানান, ফাউন্ডেশন এখন পর্যন্ত প্রশিক্ষণের জন্য হুডযুক্ত কাক ব্যবহার করেছে। তবে দোয়েল এবং জ্যাকডাওরা (ছোট জাতের কাক) শিগগিরই এ প্রকল্পে যোগ দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

২০১৮ সালে, ফ্রান্সের পুই ডি ফৌ থিম পার্কে ছয়টি কাককে আবর্জনা তুলে বাক্সে জমা করার জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। ওই রিসোর্টের সভাপতি নিকোলাস ডি ভিলিয়ার্স ওই সময়ে জানিয়েছিলেন, ‘এ কাজের মাধ্যমে আমরা বোঝাতে চেয়েছি, দর্শনার্থীরাও যেন তাদের অনুকরণ করেন এবং প্রকৃতি ও পরিবেশের যত্ন নিতে সচেষ্ট হন।’ এর আগে ২০১৭ সালে ডাচ কোম্পানিও রাস্তায় ফেলে দেওয়া আবর্জনা ও সিগারেটের বাট তুলতে কাকগুলোকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার চেষ্টা করেছিল।