অনলাইন ডেস্কঃ
করোনা সংক্রমণের বৈরীতার মাঝেও রক্তলাল পলাশ-শিমুল ফুটেছে। প্রকৃতিতে শুষ্ক-রুক্ষতা দেখা গেলেও শীতের এই মৌনতা ভেঙে প্রকৃতিতে নতুন রূপে উদিত হলো বসন্ত। নিয়ে এসেছে নতুন বার্তা। সারাদেশে নাচে-গানে বসন্তকে বরণ করে নিয়েছে মানুষ। গতকাল সোমবার জাতীয় বসন্ত উদযাপন পরিষদের আয়োজনে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্ত মঞ্চে এসো মিলি প্রাণেরই উৎসবে শ্লোগানকে ধারণ করে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নাচে-গানে অনুষ্ঠিত হয় বসন্তবরণ। এদিন সূর্যোদয়ের পরপরই ঋতুরাজ বসন্তকে বরণ করে নিতে বাসন্তী রঙের শাড়ি ও পাঞ্জাবি পড়ে অসংখ্য নারী, পুরুষ ও শিশুকে মুক্তমঞ্চের দিকে এগিয়ে আসতে দেখা যায়।
প্রতিবছর জাতীয় বসন্ত উদযাপন পরিষদের আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার বকুল তলা, রবীন্দ্র সরোবর, রমনাসহ বিভিন্ন জায়গায় বসন্তবরণ অনুষ্ঠান করা হলেও মহামারির কারণে এবার শুধু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চেই কেন্দ্রীয়ভাবে উদযাপন হয়েছে দিবসটি। জাতীয় বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষদের আয়োজনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মুক্তমঞ্চে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত এ উৎসব চলে
বেঙ্গল মিউজিকের (সমবেত বাদ্যযন্ত্র) বাসন্তী রাগ পরিবেশনের মধ্যদিয়ে দিবসের শুভ সূচনা হয়। এরপর দলীয় সংগীত পরিবেশন করে সুরসপ্তক, সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী, সুরবিহার (শিশু-কিশোর)। অনুষ্ঠানে আবৃতি করেন ভাস্বর বন্দোপাধ্যায়, আহকাম উল্লাহ ও নায়লা তারাননুম চৌধুরী কাকলি।
একক সংগীত পরিবেশন করেন শামা রহমান, মহাদেব ঘোষ, অনিমা মুক্তি গমেজ, বিমান চন্দ্র বিশ্বাস, বিজন চন্দ্র মিস্ত্রি, মাহমুদুল হাসান, ফেরদৌসি কাকলি, নুসরাত বিনতে নুর, নবনীতা জাইদ চৌধুরী, সঞ্জয় কবিরাজ, এস. এম মেজবা।
এতে দলীয় নৃত্য পরিবেশন করেন স্বপ্ন বিকাশ কলা কেন্দ্র, সাধনা সংস্কৃতি মন্ডল, নৃত্যম, ধ্রুপদ কলা কেন্দ্র, ভাবনা, ধৃতি নর্তনালয়, স্পন্দন, নৃত্যাক্ষ, কত্থক, ঢাক নৃত্য, নৃক্কন পারফরমিং আর্ট, নবচেতনা, মুদ্রা ক্ল্যাসিক্যাল ডান্স, পুষ্পাঞ্জলি কলাকেন্দ্র ও দুটি দ্বৈত নৃত্য। এদিকে দিনটিকে ঘিরে লাল-হলুদ শাড়ী আর পাঞ্জাবিতে বসন্তের সাজে সেজেছে সবাই। লোকে লোকারণ্য ছিল পুরো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাস। শাহবাগ-টিএসসি, টিএসসি- শহীদ মিনার ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান জুড়ে ছিল মানুষের উপচে পড়া ভীড়। টিএসসি ও টিএসসি সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রবেশপথে বসেছিল অসংখ্য অস্থায়ী ফুলের দোকান। উচ্ছাস উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে বসন্তকে বরণ করে নিয়েছে মানুষ।