সীতাকুন্ড উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে “যুব চত্বর” নির্মাণ ও দোকান বরাদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম এর অভিযোগ
সীতাকুন্ড উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে নির্মিত যুব চত্বর

নিউজ ডেস্ক । ।  

চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে “যুব চত্বর” নির্মাণ ও দোকান বরাদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম এর অভিযোগ উঠেছে উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা শাহ আলমের বিরুদ্ধে । গত ১৯ এপ্রিল ২০১৮ সালে সাবেক ইউএনও নাজমুল ইসলাম ভুইয়া বদলিজনিত অবস্থায় তড়িঘড়ি করে ভিত্তি প্রস্থর করেন উপজেলা চেয়ারম্যান এস.এম আল মামুন, ভাইস চেয়ারম্যান মো.আলাউদ্দিন সাবেরি ও নাজমুন নাহার নেলি।

জানা যায়,উপজেলা পরিষদ শহীদ মিনার চত্বরের উত্তর-পশ্চিম কর্ণারে উপজেলা পরিষদ রাজস্ব তহবিলের অর্থায়ন ও উন্নয়ন কর্মকা-ের আশ্বাসে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে অনুদানে নির্মিত হয়েছে যুব চত্বর।   ব্যক্তিগত অর্থায়নে এই প্রকল্প হওয়ার অভিপ্রায়ে প্রশিক্ষিত আবেদনকারি যুবদের কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা করে ১২টি দোকান থেকে ৯লক্ষ ৬০ হাজার টাকা অনেক আগে নিয়ে নেয়া হয়েছে। কিন্তু প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ২১ লক্ষ টাকা, ১৭ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা খরচ করা হয়েছে। প্রকল্পে তারল্য সংকট দেখিয়ে উপজেলা মাসিক সভায় ২ প্রকল্প দেখিয়ে ২ লক্ষ টাকা করে ৪লক্ষ টাকা রাজস্ব খ্যাত থেকে নেয়া হয়েছে। নিয়ে ভিত্তি প্রস্থর থেকে উদ্ধোধন পর্যন্ত এই প্রকল্প নিয়ে সাবেক ইউএনও ও যুব উন্নয়ন কর্মকতার্কে নিয়ে অর্থ লোপাড়, দোকান বরাদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। স্বাভাবিকভাবে এই প্রকল্প সর্ব সাপেক্ষে খরচ হওয়ার কথা রয়েছে ৮/১০ লক্ষ টাকা,সেখানে খরচ দেখিয়েছে ১৭ লক্ষ ৩১ হাজার টাকা। কিন্তু অনেক যুবক, প্রতিষ্ঠান ও ব্যবসায়ীর অভিযোগ এই প্রকল্পের নামে একদিকে সাবেক ইউএনও অর্থ সংগ্রহ করেছে, অন্যদিকে যুব কর্মকর্তাও অর্থ সংগ্রহ করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়। দোকান বরাদ্ধেও সঠিক যুব বেকার উদ্যোক্তাদের না দিয়ে ১২টি দোকান থেকে ৬টি দোকান তাদের নিজস্ব বলয়ে দেওয়া হয়। যেখানে একটি দোকান যুব কর্মকর্তা শাহ আলমের কন্যা শাহনাজ আলম সারাকে দেওয়া হয়। একইভাবে উপজেলা ইউএনও‘র  সি.এ আবুল খায়েরের শালীকা ফাহিদা সুলতানাকে দোকান বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে অনেক উদ্যোক্তা অভিযোগ করেন দোকান বরাদ্ধের তালিকায় ২০১৩/১৪ সালের নাশকতার মামলার আসামিও রয়েছে।

যুব চত্বর নির্মাণ প্রকল্পের সভাপতি ভাইস চেয়ারম্যান মো.আলাউদ্দিন সাবেরি ও নাজমুন নাহার নেলি ক্ষোভের সাথে জানান, আমরা এই প্রকল্পের সভাপতি কিনা আজও জানিনা।  আমাদের কাছ থেকে ২ লক্ষ টাকা করে ২টিতে মোট ৪ লক্ষ টাকার রাজস্ব প্রকল্পের চেকে সই করে ছিলাম, এই টাকার শতভাগ কাজ হয়েছে নিশ্চিত করে বলতে পারি। কার স্বার্থে এই প্রকল্প? আমরা কিছুই জানি না। আপনাদের (সাংবাদিক) কাছ থেকে জানলাম আমরা এই প্রকল্পের সভাপতি। কবে উদ্ধোধন হবে তাও আমরা এখনো জানি না।’
এই প্রসঙ্গে সাবেক ইউএনও তারিকুল আলম জানান, উপজেলা পরিষদের নীতিমালায় যুব চত্বর নামে কোন কিছুর অস্তিত্ব নেই।
এ বিষয়ে এই প্রকল্পের সচিব উপজেলা যুব কর্মকর্তা মো.শাহ আলম প্রকল্পের নামে অর্থ লোপাট,দোকান বরাদ্ধে অনিয়মসহ বিভিন্ন বিষয়ে বলেন,‘এখানে কোন অনিয়ম হয়নি, যারা যুব প্রশিক্ষণ নিয়েছে তারা দোকান বরাদ্ধ পেয়েছে।’

বর্তমান ইউএনও মিল্টন রায় বলেন,‘আসলে এই প্রকল্প সম্পর্কে আমি তেমন অবগত নই, সাবেক ইউএনও ও যুব কর্মকর্তা কিভাবে এই কাজটি করেছে আমি জানি না,তবে উপজেলা পরিষদ তহবিল থেকে দুই প্রকল্পে ৪ লক্ষ টাকা নিয়েছে,বাকি টাকা মনে হয় যুব কর্মকর্তা আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে নিয়েছে। তবে এই যুব চত্বর নিয়ে অর্থ ও দোকান বরাদ্ধে কিছু অনিয়ম আছে বলে আমি শুনেছি।’
এদিকে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে যুব চত্বর নির্মাণের বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মো.ইসমাইল হোসেন জানান,‘উপজেলা পরিষদে উদ্যোগে উপজেলা চত্বরে যুব চত্বর নামে দোকান-পাঠ করার কোন অবকাশ নাই,আর কেউ যদি দোকান-পাঠ করেও থাকে আমরা তা ঘুড়িয়ে দিব।’